অর্থ, প্রকৃতি ও জীবনের সৌন্দর্য সবকিছুই তখনই উপভোগ্য যখন আমাদের শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত থাকে। শারীরিক সুস্থতার সঙ্গে মানসিক সুস্থতার সম্পর্ক রয়েছে, এবং এই সামগ্রিক সুস্থতার জন্য আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্যাভ্যাসে কিছু ছোট পরিবর্তন আমাদের সুস্থতা ও অসুস্থতার মধ্যে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। চলুন দেখে নিই কীভাবে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনে সুস্থ জীবনযাপন করা যায়।
১. রিফাইন্ড গ্রেইনের পরিবর্তে হোল গ্রেইন ব্রেড
হোল গ্রেইন বা রিফাইন্ড গ্রেইন—এই দুটি গ্রেইনের মধ্যে মূল পার্থক্য শস্যের দানায়। হোল গ্রেইনে পুষ্টি ও আঁশের পরিমাণ বেশি থাকে, যা হজম প্রক্রিয়া এবং রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। রিফাইন্ড গ্রেইন খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
২. পর্যাপ্ত পানি পান
সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা অপরিহার্য। পানি খাবার হজমে সাহায্য করে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখে। গবেষণা দেখিয়েছে, খাবার খাওয়ার আগে এক গ্লাস পানি পান করলে মানুষ সাধারণত ২২ শতাংশ কম খাবার খান।
৩. স্বাস্থ্যকর নাশতা নির্বাচন
নাশতা আপনার দৈনন্দিন খাদ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অস্বাস্থ্যকর নাশতার পরিবর্তে দই, ফল, সালাদ ও হোল গ্রেইন টোস্ট রাখলে শরীরে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।
৪. প্রোটিনের পরিমাণ বাড়ানো
প্রোটিন শরীরের শক্তি এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়ক। সকালের নাশতায় ডিম, দই, বাদাম ও মাছ রাখলে অপ্রয়োজনীয় ক্যালোরির চাহিদা কমবে।
৫. খাবারের সাজসজ্জায় নজর দেওয়া
স্বাস্থ্যকর খাবারও ড্রেসিংয়ের কারণে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যেতে পারে। তাই ড্রেসিংয়ের পরিমাণ কমিয়ে স্বাস্থ্যকর তেল ব্যবহার করুন।
৬. বেশি ফল ও সবজি খাওয়া
প্রতিদিনের খাদ্যে ফল ও সবজি বাড়ানো হলে সুস্থতা অনেক বেড়ে যায়। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের জন্য দিনে দেড় থেকে দুই কাপ ফল এবং ২-৩ কাপ সবজি খাওয়া উচিত।
৭. প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা
প্রক্রিয়াজাত খাবারের পরিবর্তে তাজা ফল ও সবজি, বাদাম এবং সামুদ্রিক মাছ খেলে শরীর সুস্থ থাকবে।
৮. লো-ফ্যাট ডেইরি পণ্য বেছে নেওয়া
লো-ফ্যাট ডেইরি পণ্য গ্রহণ করলে ক্যালোরি কমে এবং স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে।
৯. মাংস পাতলা করে কাটা
মাংসের ক্ষেত্রে চামড়া ছাড়া মুরগি, টার্কি বা সয়া বেছে নিন, এবং মাংস পাতলা করে কাটুন।
১০. শর্করা গ্রহণে সতর্কতা
শর্করা সবসময় খারাপ নয়; ফল ও সবজির শর্করা ভালো। অস্বাস্থ্যকর নাশতার পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর বিকল্প বেছে নিন।
খাদ্যাভ্যাসে ছোট ছোট পরিবর্তন শারীরিক ও মানসিক উভয়ভাবেই ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সহজ কিছু পদক্ষেপে আপনি খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে পারেন এবং সুস্থ জীবনযাপন নিশ্চিত করতে পারেন।