“ইসরায়েলি ৩ জিম্মি মুক্ত, ৩৬৯ ফিলিস্তিনি কারামুক্ত”

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, হামাস ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন তিনজন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে। আজ শনিবার, আন্তর্জাতিক রেডক্রস সংস্থার মাধ্যমে তাদের ইসরায়েলের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এর বিনিময়ে, ইসরায়েলের দুই কারাগার থেকে ৩৬৯ জন ফিলিস্তিনি বন্দী মুক্তি পেয়েছেন।

গাজার খান ইউনিস শহরে একটি মঞ্চের দিকে তাদের নিয়ে যাওয়ার সময়, হামাস যোদ্ধারা তিনজনকে জড়ো হওয়া লোকজনের সামনে ভাষণ দেওয়ার জন্য আহ্বান করেন। তারা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী বাকী জিম্মি ও বন্দী বিনিময়ের কাজ শেষ করার আহ্বান জানান। পরে তাদের রেডক্রসের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মুক্তি পাওয়া তিন জিম্মির নাম প্রকাশ করেছেন: সাগুই দেকেল চেন, সাশা ত্রুপানভ ও ইয়াইর হর্ন। তাদের ফেরত পাওয়ার বিষয়টি ইসরায়েলি বাহিনীও নিশ্চিত করেছে। এই খবর পাওয়ার পর, তেল আবিবে লোকজন তাদের স্বাগত জানাতে জড়ো হন, হাতে ‘যুদ্ধবিরতি পুরোপুরি শেষ করুন’ লেখা পোস্টার নিয়ে।

এদিকে, ইসরায়েল পরিচালিত কারাগার থেকে ফিলিস্তিনি বন্দীদের বহনকারী বাসটি পশ্চিম তীরের রামাল্লায় পৌঁছালে সেখানে উপস্থিত ফিলিস্তিনিরা তাদের উল্লাস প্রকাশ করে স্বাগত জানান। আরও কিছু বাস ফিলিস্তিনি বন্দীদের নিয়ে গাজায় পৌঁছায়, নেগেভ মরুভূমিতে অবস্থিত কারাগার থেকে।

গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর, ছয়টি জিম্মি ও বন্দী বিনিময় হয়েছে। আজ পর্যন্ত মোট ১৯ জন জিম্মি মুক্তি পেয়েছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপে ৩৩ জন জিম্মি মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল হামাসের।

শুক্রবার, হামাস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে জিম্মি মুক্তি স্থগিত করার হুমকি দিয়েছিল, তবে পরে দুই পক্ষই সম্মত হয় যে, পরিকল্পনা অনুযায়ী জিম্মি ও বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে।

গাজায় যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপ নিয়ে আলোচনা দ্রুত শুরু হবে, এবং এক্ষেত্রে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইসরায়েল সফর করবেন। এদিকে, গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের নীতি নিয়ে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর বিরোধিতা রয়েছে। এ বিষয়ে আলোচনা করতে আগামী বৃহস্পতিবার রিয়াদে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে মিসর, জর্ডান, কাতার ও ইউএই-এর নেতারা অংশগ্রহণ করবেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায়। এরপর থেকেই গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী নির্বিচারে হামলা চালিয়ে চলেছে, যার ফলে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ৪৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি আহত হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।