“পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের আকৃতি বদলাচ্ছে”

বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি নিশ্চিত করেছেন, পৃথিবীর অভ্যন্তরের কেন্দ্রভাগ সম্প্রতি উল্টো দিকে ঘুরতে শুরু করেছে, এবং এই বিষয়টি তারা মাত্র কয়েক মাস আগে শনাক্ত করেছিলেন। এই নতুন গবেষণায় তারা আরও একটি রহস্য উদ্ঘাটন করেছেন—পৃথিবীর কেন্দ্রের আকৃতি পরিবর্তিত হচ্ছে।

পৃথিবীর অভ্যন্তরের কেন্দ্রের স্তরটি গরম এবং কঠিন ধাতব বলের মতো, যা তরল ধাতব স্তরের দ্বারা ঘিরে রয়েছে। বহু বছর ধরে বিজ্ঞানীরা অনুমান করছিলেন, পৃথিবীর অভ্যন্তরের এই কঠিন কেন্দ্রভাগ সময়ের সাথে বিকৃত হতে পারে। তবে প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছেন যে, গত ২০ বছরে ভূ-কেন্দ্রের আকৃতিতে আসা এই বিকৃতি ভূমিকম্পের তরঙ্গে স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে।

এছাড়া, একাধিক গবেষণায় পৃথিবীর অভ্যন্তরের ঘূর্ণনের প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে নতুন গবেষণায় “অঘূর্ণয়নশীল পরিবর্তন” বিষয়টি সামনে এসেছে, যা আরও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছে এবং এই বিষয়টি আলোচনা ও বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করবে।

২০২৪ সালে একটি গবেষণায় বিজ্ঞানীরা ভূমিকম্পের তথ্য ব্যবহার করে জানিয়ে দেন যে, পৃথিবীর অভ্যন্তরের কেন্দ্র একসময় পৃথিবীর তুলনায় দ্রুত গতিতে ঘুরত। তবে ২০১০ সালের শুরুর দিকে, ভূ-কেন্দ্রের ঘূর্ণন ধীর হয়ে আসে এবং বর্তমানে পৃথিবীর অন্যান্য অংশের তুলনায় এটি উল্টো দিকে ঘুরছে।

নতুন এই গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া বিজ্ঞানী জন ভিদেল, যিনি ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার অধ্যাপক, জানিয়েছেন, পূর্ববর্তী গবেষণাগুলোর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা ভূমিকম্পের তরঙ্গের উচ্চতা পার্থক্য ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হয়েছেন, যা পৃথিবীর অভ্যন্তরের কেন্দ্রের পরিবর্তনকে চিহ্নিত করে।

এছাড়া, গবেষকরা জানিয়েছেন যে, পৃথিবীর কেন্দ্রের আকৃতির পরিবর্তন আমাদের গ্রহের গভীরে বিদ্যমান শক্তির উৎস সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করতে পারে, যা পৃথিবীর চৌম্বকীয় ক্ষেত্রকে শক্তি যোগায়। এই চৌম্বকীয় শক্তির রেখাগুলি আমাদের গ্রহকে সৌর বিকিরণ ও মহাকাশীয় ঝুঁকির থেকে রক্ষা করে।

নিউ জার্সির রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ইয়োশি মিয়াজাকি বলেন, এ ধরনের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি পৃথিবীর অভ্যন্তরের ঘূর্ণন নিয়ে দীর্ঘদিনের বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করবে এবং আরও বিস্তৃত আলোচনা সৃষ্টি করবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।