আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গণহত্যার বিচার এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট না করলে, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন, যমুনা ঘেরাও করার ঘোষণা দিয়েছে গণ অধিকার পরিষদ। সংগঠনটি আরও জানিয়েছে যে, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ব্যর্থ হওয়ায়, তাদের কাছ থেকে কোনো ধরনের রাষ্ট্র সংস্কারের প্রত্যাশা করছে না দলটি।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর পল্টন এলাকায় গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এই দাবি জানানো হয়। পরে, এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ বিষয়ে ঘোষণা করা হয়।
গণ অধিকার পরিষদ এই সমাবেশের আয়োজন করেছে জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত গণহত্যা, একদলীয় ফ্যাসিস্ট শাসনব্যবস্থা এবং গত ১৬ বছরের অপরাধের বিচার ও রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে। সমাবেশ শেষে, বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকার জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে সংগঠনের নেতারা।
সমাবেশে দলের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, “আওয়ামী লীগ যে অপরাধ করেছে, তারা কখনো ক্ষমা পেতে পারে না। শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে ফাঁসিতে ঝোলাতে হবে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে সহানুভূতি দেখানো মানে শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা। এই বেইমানি যারা করবে, তাদের অবস্থাও আওয়ামী লীগের মতো হবে।” তিনি আরও বলেন, “গণ অধিকার পরিষদ শুরু থেকেই গণহত্যার বিচারে সোচ্চার। তবে সরকারের কোন কার্যকর উদ্যোগ এখনও দেখা যাচ্ছে না। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গণহত্যার বিচার এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট না করলে, যমুনা ঘেরাও করা হবে।”
এছাড়া, গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের ব্যর্থ উল্লেখ করে বলেন, “সরকারের অযোগ্য উপদেষ্টা পরিষদের মাধ্যমে রাষ্ট্র সংস্কার সম্ভব নয়। রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য বিপ্লবী উপদেষ্টার প্রয়োজন, কিন্তু এই উপদেষ্টাদের বেশিরভাগই সুশীল, তাই তাদের কাছ থেকে কোনো সংস্কারের আশা করা যায় না।”
তিনি উপদেষ্টাদের আর্থিক হিসাব জনসম্মুখে প্রকাশের দাবি জানিয়ে বলেন, “তারা আগে নিজেদের জবাবদিহি নিশ্চিত করুন।”
সরকারের দপ্তরগুলোতে ছাত্র প্রতিনিধিদের নিয়ে সমালোচনা করে রাশেদ বলেন, “কমিটিতে ছাত্রদের কি কাজ? সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের খেয়ালী আচরণ দেশের জন্য ক্ষতিকর বার্তা দিচ্ছে।”
ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা এককভাবে দখল করে সরকারের সহযোগিতায় কোনো কিংস পার্টি জনগণ মেনে নেবে না।”
গণ অধিকার পরিষদের মুখপাত্র ও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফারুক হাসান বলেন, “আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো উদ্যোগ আমরা দেখছি না। বরং আমরা নমনীয়তা ও উদারতা দেখতে পাচ্ছি। আমাদের পরিষ্কার বক্তব্য, গণহত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা এবং তাদের নিবন্ধন বাতিল করা উচিত।”
ঢাকা জেলা গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি শেখ শওকত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উচ্চতর পরিষদের সদস্য মাহফুজুর রহমান, সহসভাপতি আবদুর রহমান, জাফর মাহমুদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিল প্রমুখ।