ব্রাজিলে ফিরেছেন নেইমার, তার উৎসব ও আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। এখন সময় মাঠে ফিরতে, আর সেই লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো সান্তোসের অনুশীলনে অংশ নিতে গিয়েছিলেন তিনি। তবে পুরো বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মূল কেন্দ্র ছিল কীভাবে তিনি সান্তোসে পৌঁছেছিলেন। মনে হতে পারে, বিলাসবহুল কোনো গাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, কিন্তু তা নয়। নেইমার নিজেই তাঁর হেলিকপ্টারে চড়ে সান্তোসের অনুশীলন গ্রাউন্ডে পৌঁছেছিলেন।
আল হিলালের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে নেইমার শৈশবের ক্লাব সান্তোসে ফিরে এসেছেন। তিনি ছয় মাসের জন্য চুক্তি করেছেন, আর বর্তমানে রিও ডি জেনিরোর মানগারাতিবায় নিজের বাসায় অবস্থান করছেন। ছুটির দিনগুলো কাটানোর পর, নেইমার অনুশীলনে যাওয়ার জন্য তাঁর ব্যক্তিগত হেলিকপ্টারে যাত্রা করেন। এই হেলিকপ্টারটি ২০১৯ সালে কেনা, যার দাম প্রায় ৫ কোটি রিয়াল (১০৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা)।
নেইমারের হেলিকপ্টারটি একটি এয়ারবাস বিকে ১১৮ ডি–২ মডেল, যা দুটি টার্বোশ্যাফট ইঞ্জিন দ্বারা চালিত। এই হেলিকপ্টারের সর্বোচ্চ যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ১০ জন, এবং এটি রাতে ও খারাপ আবহাওয়াতেও চলাচল করতে সক্ষম।
সান্তোসে প্রায় সাড়ে ১১ বছর পর ফিরলেন নেইমার। ২০১৩ সালে ক্লাবটি ছেড়ে তিনি যোগ দেন বার্সেলোনায়, এরপর ২০১৭ সালে পিএসজিতে চলে যান। ২০২৩ সালে পিএসজি ছেড়ে আল হিলালে যোগ দিলেও, সেই সময় তাঁর হেলিকপ্টারটি কাস্টমাইজ করা হয়েছিল প্যারিসে।
নেইমারের হেলিকপ্টারের অদ্ভুত বৈশিষ্ট্যও আছে, যেমন এর চামড়ার সিটের উপর ব্যাটম্যানের লোগো। ব্যাটম্যান নেইমারের প্রিয় সুপারহিরো। হেলিকপ্টার কেনার আগে, নেইমারের বহরে আরও দুটি আকাশযান ছিল—একটি ২০১২ সালে তৈরি হেলিকপ্টার এবং একটি ২০০৮ সালে কেনা সেসনা সি প্লেন।
ফোর্বস জানায়, নেইমারের মোট সম্পদের মূল্য ১০১ কোটি ডলার। ২০২৩ সালে তিনি ১১ কোটি ডলার আয় করেছেন, এবং তিনিই ছিলেন তৃতীয় সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া খেলোয়াড়।
গ্লোবো জানিয়েছে, মানগারাতিবা থেকে সান্তোসে যাওয়ার জন্য নেইমারের হেলিকপ্টারে প্রায় ২৪০ থেকে ৩৫০ লিটার তেল খরচ হবে। তেল খরচের পরিমাণ যাত্রী সংখ্যা ও হেলিকপ্টারের ওজনের ওপর নির্ভর করে। শুধু যাওয়া-আসা করতে হেলিকপ্টারের তেল খরচ হবে ৭,০০০ রিয়াল (১,৪৪,০০০ টাকা) পর্যন্ত। এর পাশাপাশি, হেলিকপ্টারের ক্রু ও মেইনটেইন্যান্স খরচও রয়েছে, যা বছরে প্রায় ৪ থেকে ৫ লাখ ডলার (৬ কোটি ৯ লাখ টাকা) হতে পারে।
নেইমার সান্তোসে ছয় মাসের চুক্তি করেছেন, তবে এই চুক্তি আরও এক বছর বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। এখন তাঁর মূল লক্ষ্য—চোট কাটিয়ে দ্রুত মাঠে ফিরে আসা এবং ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের জন্য ব্রাজিল জাতীয় দলে স্থান পাওয়া।
এদিকে, নেইমার তাঁর পরিবার নিয়ে সান্তোস শহরে স্থায়ী হওয়ার পরিকল্পনা করছেন, যদিও তাঁর স্ত্রী ব্রুনা বিয়ানকার্দি ও মেয়ে মাভি মানগারাতিবায় থাকবেন।