প্রধান উপদেষ্টা শফিকুল আলম জানিয়েছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে, তা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর চাওয়ার ওপর নির্ভর করবে। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, প্রধান উপদেষ্টা আগেই দুটি সম্ভাব্য সময় ঘোষণা করেছেন— একটি চলতি বছরের ডিসেম্বর এবং অন্যটি আগামী বছরের জুনে। তবে, রাজনৈতিক দলগুলোর পরামর্শ অনুযায়ী নির্বাচন তারিখ নির্ধারণ করা হবে।
সোমবার রাতে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রেস সচিব শফিকুল আলম এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর ও সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি।
প্রেস সচিব আরও জানান, “আগেই প্রফেসর ইউনূস দুটি সম্ভাব্য তারিখ দিয়েছিলেন— একটি হচ্ছে এই ডিসেম্বর, আরেকটি পরের বছরের জুন। যদি সব রাজনৈতিক দল একমত হয়ে বলে যে, তারা ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায়, তবে প্রধান উপদেষ্টা এটা বিবেচনা করবেন। তিনি কখনো বলেননি যে, তিনি একদম স্থির থাকবেন জুন মাসে নির্বাচন করবেন। বিষয়টি মূলত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যাশার ওপর নির্ভর করবে।”
এদিনের সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম জানান, সোমবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি তাদের দাবি জানিয়েছে, তারা দ্রুত নির্বাচন চান, বিশেষ করে এই ডিসেম্বরেই। এছাড়া, নির্বাচনকালীন পরিস্থিতি ও কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে বিএনপি আলোচনা করেছে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা হয়নি, তবে জাতীয় নির্বাচন দ্রুত অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন। এ ব্যাপারে উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নেবে।
আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানানো হয়।
বইমেলা নিয়ে একটি প্রসঙ্গে, প্রেস সচিব বলেন, বাংলা একাডেমির সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে এবং পুরো ঘটনা জানার পর দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, বইমেলা একটি পবিত্র জায়গা এবং তার পবিত্রতা রক্ষা করা সরকারের লক্ষ্য।
এছাড়া, আওয়ামী লীগের আমলে বিএনপির নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া “হয়রানি” মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনার কথা জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন, বিএনপি চাইছে যে, “অপারেশন ডেভিল হান্ট” অভিযানে মানবাধিকার লঙ্ঘন না ঘটে, এবং প্রধান উপদেষ্টা মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছেন।
বৈঠকে আইন উপদেষ্টা জানান, গায়েবি মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে দ্রুত কাজ চলছে। বিএনপির পক্ষ থেকে সংস্কারের বিষয়ে পূর্ণ সমর্থন প্রকাশ করা হয়েছে এবং তারা দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সচেষ্ট।
এ সময়, প্রেস সচিব আরও বলেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতির দিকে জোর দিয়েছে এবং প্রধান উপদেষ্টা এ ব্যাপারে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। বর্তমানে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং কোনো ধরনের ভাঙচুর নেই।