“অন্তর্বর্তী সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ, মির্জা ফখরুলের অভিযোগ”

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মন্তব্য করেছেন যে, বর্তমান সরকারের অব্যক্ত পরিস্থিতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলার অবনতি এবং অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থতা দেশের জনগণের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফেরাতে দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন।

মির্জা ফখরুল এসব মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ছয় মাস, বিরাজমান রাষ্ট্র পরিস্থিতি বিষয়ে পরামর্শে” নামক একটি লিখিত পরামর্শে। তিনি সোমবার রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এই পরামর্শের অনুলিপি প্রদান করেন।

পরামর্শে বলা হয়, দেশের সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় জনগণের মধ্যে গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ক্রমেই কমে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার, যাকে ‘ফ্যাসিবাদী’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে চেষ্টা করছে। দেশের বাইরে বসে হাসিনা এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করছেন, এবং আওয়ামী লীগকে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারিক প্রক্রিয়ার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয় যে, তারা ছয় মাসেও পলাতক স্বৈরাচার ও তাদের সহযোগীদের আইনের আওতায় আনতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হয়নি, যার ফলে জনগণ আইন হাতে তুলে নেয়ার মতো বেআইনি কার্যক্রমে উৎসাহিত হচ্ছে।

এছাড়া, সরকার জনগণের নানা দাবি ও আশা পূরণের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যর্থ বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। তারা বলে, নির্বাচিত সরকার না থাকায় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং বিনিয়োগের গতি থেমে গেছে, ফলে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

বিএনপি আরও জানায় যে, দেশের গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক ও মানবাধিকারভিত্তিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরি। তারা দাবি করে, দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করতে হবে, এবং নির্বাচনমুখী সংস্কার শেষে জনগণের পছন্দের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও জীবনমান উন্নয়নে সক্ষম হবে।

বিএনপি আরও উল্লেখ করেছে যে, সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখনও অপকর্মে জড়িত ব্যক্তিরা বহাল আছেন, যাদের অপসারণ করা না হলে তারা ভবিষ্যতে পতিত ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করতে পারে। এর বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায় দলটি।

এছাড়া, কিছু উপদেষ্টা রাজনৈতিক দল গঠনে জড়িত থাকার প্রক্রিয়াও নিয়ে জনগণের মধ্যে সংশয় সৃষ্টি করেছে, এবং প্রশাসন যন্ত্রের ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিএনপি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।