ভিটামিন ডি’র গুরুত্ব

ভিটামিন ডি একটি চর্বিতে দ্রবণীয় পুষ্টি উপাদান, যা শরীরে ক্যালসিয়াম, ফসফেট এবং অন্যান্য খনিজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি অস্থির কাঠামো তৈরি এবং হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। যদিও এটি একটি ভিটামিন হিসেবে পরিচিত, প্রকৃতপক্ষে ভিটামিন ডি একটি স্টেরয়েড হরমোন, যা শরীরের প্রোটিন উৎপাদনে নিয়ন্ত্রণকারী হিসেবে কাজ করে। অন্য ভিটামিনগুলোর মতো এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বা কো-এনজাইম হিসেবে কাজ না করে, বরং দেহের জিন এক্সপ্রেশন নিয়ন্ত্রণে রাখে। ভিটামিন ডি শরীরে তৈরি হয় প্রধানত সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির মাধ্যমে, যা প্রাণীজ এবং উদ্ভিদজাত স্টেরল থেকে রূপান্তরিত হয়ে দেহে প্রবাহিত হয়। মানব দেহে দুটি প্রকার ভিটামিন ডি পাওয়া যায়—ভিটামিন ডি-২ এবং ডি-৩।

ভিটামিন ডি’র অভাবে যেসব সমস্যা হতে পারে

শিশুদের মধ্যে: ভিটামিন ডি অভাবে শিশুদের মধ্যে রিকেটস (হাড় বাঁকা), পেশির খিঁচুনি, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা, হাঁপানি, চর্মরোগ এবং ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দিতে পারে। শীতপ্রধান দেশগুলোতে শিশুদের মধ্যে এসব সমস্যা বেশি দেখা যায়, কারণ সেখানে তারা পর্যাপ্ত রোদ পায় না। এর ফলে তাদের খাবার থেকেও ভিটামিন ডি সঠিকভাবে শোষিত হতে পারে না।

রিকেটস: ভিটামিন ডি-এর অভাবে এবং ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে ক্যালসিয়াম শোষিত না হলে রিকেটস হয়, যা হাড়ের নরম বা ভঙ্গুরতা সৃষ্টি করে। শিশুদের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে জন্মের প্রথম তিন থেকে ১৮ মাসে যদি পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি না দেওয়া হয়, তবে তাদের হাত-পা বাঁকা বা দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।

প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে: ভিটামিন ডি অভাবের কারণে ক্লান্তি, পেশিতে দুর্বলতা এবং হাড়ে যন্ত্রণা হতে পারে। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এর প্রভাব সাধারণত পেশির দুর্বলতা, সিঁড়ি ওঠা বা চেয়ার থেকে উঠতে কষ্ট হওয়া এবং পায়ের মাংসপেশির সাথে হাড়ের সংযোগ দুর্বল হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে। অধিকন্তু, সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, ভিটামিন ডি-এর অভাব হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, স্ট্রোকসহ অন্যান্য নানা রোগের সঙ্গেও সম্পর্কিত। তাই শরীরের সুস্থতার জন্য ভিটামিন ডি এবং অন্যান্য খনিজ উপাদান গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সঠিকভাবে খাদ্য থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া এবং সূর্যের আলোতে কিছুটা সময় কাটানো ভিটামিন ডি’র অভাব কাটাতে সহায়ক হতে পারে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।