ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা আসবে, যা পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী প্রায় তিন সপ্তাহের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। দলের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তারা। দলটির গঠনতন্ত্র কেমন হবে এবং শীর্ষ নেতৃত্বে কারা আসবেন, এই বিষয়ে এখনো চলছে তুমুল প্রস্তুতি। মাঠে তৎপরতা বেড়েছে। জাতীয় নাগরিক কমিটির সূত্রে জানা গেছে, দল ঘোষণা করার একদম শেষ মুহূর্তে গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করা হবে। দলের শীর্ষ নেতৃত্বও তখনই ঠিক করা হবে, তবে বর্তমানে শীর্ষ নেতৃত্বের শর্টলিস্টে রয়েছেন জুলাই গণ অভ্যুত্থানের ১১ পরিচিত মুখ।
সূত্র জানিয়েছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে সামনে রেখে তরুণরা ‘ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত’ বাস্তবায়ন করতে তরুণদের নেতৃত্বে একটি রাজনৈতিক দল গঠনের কাজ করছে। ফেব্রুয়ারির ১০ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে যেকোনো দিন নতুন দলের নাম এবং আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হবে। কমিটির শর্টলিস্টে রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারে তিন ছাত্র উপদেষ্টা—নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম। এছাড়া রয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, সদস্যসচিব আরিফ সোহেল ও মুখপাত্র উমামা ফাতেমা।
জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ নেতারা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, এখন সবচেয়ে বেশি আলোচনা চলছে অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা তিন ছাত্র উপদেষ্টাকে নিয়ে। তাদের বিষয়ে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। দল ঘোষণার আগ পর্যন্ত আলোচনা চলবে। দল এবং অন্তর্বর্তী সরকার উভয় পক্ষের সুবিধা বিবেচনা করে কোনো একজন অথবা দুজন উপদেষ্টা সরকারের পদ থেকে পদত্যাগ করে দলের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন।
এ বিষয়ে নেতারা জানান, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের নাম সর্বাধিক উচ্চারিত হচ্ছে দলের নেতৃত্বে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত কেউ কিছু নিশ্চিত করে বলছেন না। রাজনৈতিক দলের নাম কী হবে, জানতে চাইলে নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ জানান, এ পর্যন্ত শতাধিক নামের প্রস্তাব এসেছে, এবং কিছু নাম শর্টলিস্টেও রাখা হয়েছে। চূড়ান্ত নাম আত্মপ্রকাশের দিন ঘোষণা করা হবে।
গঠনতন্ত্র বিষয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও সহ-মুখপাত্র মুশফিক উস সালেহীন বলেন, তারা একটি সাংগঠনিক কাঠামো তৈরি করতে চান, যেখানে তৃণমূল থেকে যোগ্য ব্যক্তিরা শীর্ষ নেতৃত্বে উঠে আসতে পারবেন। দলের অভ্যন্তরে গণতান্ত্রিক চর্চা নিশ্চিত করতে জোর দেওয়া হবে। তিনি বলেন, “যেমনভাবে জুলাই গণ অভ্যুত্থানের সময় দেশের মানুষ আমাদের আন্দোলনকে গ্রহণ করেছিল, তেমনই আমরা চাই যে, নতুন দলের গঠনতন্ত্রও তরুণ সমাজসহ দেশের রাজনৈতিক দর্শনপ্রিয় মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হোক।”