ইসরায়েল ও হেজবুল্লাহর যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পর্কিত যা জানা যাচ্ছে

লেবাননে সকাল, যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পথে


যে কোন ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি করতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
৫০% পর্যন্ত ডিসকাউন্টে তৈরি করুন আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য
কর্পােরেট ওয়েবসাইট
ই-কমার্স ওয়েবসাইট অথবা নিউজপোর্টাল  ওয়েবসাইট।

লেবাননে এখন সকাল। এর মানে হল, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘোষিত ইসরায়েল-হেজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হতে যাচ্ছে। তবে, ইসরায়েল সতর্ক করে দিয়েছে যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হলেও বেসামরিক নাগরিকদের বাড়ি ফিরে না যাওয়ার জন্য।

কয়েক ঘণ্টা আগে রিপোর্টে বলা হয়েছিল যে, বৈরুতের দুটি এলাকায় ইসরায়েল বাহিনী সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কিছু মিনিট আগে আবারও বোমা হামলার খবর পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য, এই যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, আগামী ৬০ দিনের মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনী লেবানন থেকে সরে যাবে এবং ওই সময়ের মধ্যে লেবাননের সেনাবাহিনী হেজবুল্লাহর জায়গায় মোতায়েন হবে।

যুদ্ধবিরতির কারণ

মঙ্গলবার, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হেজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণা করেন। নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর তিনি এ ঘোষণা দেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউস থেকে চুক্তিটিকে বৃহত্তর শান্তির পথে একটি পদক্ষেপ হিসেবে স্বাগত জানিয়েছেন।

এ মুহূর্তে, ইসরায়েল-হেজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতির তিনটি কারণ উল্লেখ করা হচ্ছে:

  1. ইরানের হুমকি মোকাবেলা: নেতানিয়াহু সরাসরি কিছু বলেননি, তবে ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং পরমাণু কর্মসূচির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ধ্বংস করেছে। হেজবুল্লাহ ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে পরিচিত, এবং তার ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডারের ক্ষতি হওয়ায় সামরিক ভারসাম্য ইসরায়েলের পক্ষে চলে এসেছে।
  2. সামরিক ক্লান্তি: ইসরায়েলি বাহিনী বর্তমানে দুইটি দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ চালানোর জন্য প্রস্তুত ছিল না। লেবাননে সংঘাত শেষ হলে গাজায় আরও বেশি সেনা মোতায়েন হতে পারে, যেখানে যুদ্ধের সমাপ্তি এখনও অনিশ্চিত।
  3. হামাসের ওপর চাপ বাড়ানো: হেজবুল্লাহকে যুদ্ধ থেকে সরিয়ে নিয়ে হামাসের ওপর চাপ বাড়ানো হচ্ছে, কারণ হামাস মনে করে যে ইরানের ‘প্রতিরোধের অক্ষ’ এর অন্যান্য সদস্যরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়বে।

চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণা দলের একজন কর্মকর্তা দাবি করেছেন, বাইডেনের বহির্মুখী প্রশাসনের কারণেই এই চুক্তি সম্ভব হয়েছে, যা ট্রাম্পের বিজয়ের পরের ফলস্বরূপ।

তবে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে কিছু প্রশ্ন রয়ে গেছে। ইসরায়েল এবং হেজবুল্লাহ বাহিনীর প্রত্যাহারের পর, লেবাননের সেনাবাহিনী দক্ষিণাঞ্চলে মোতায়েন হবে, তবে তাদের কীভাবে মোতায়েন করা হবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের এই কাজ সম্পন্ন করার জন্য পর্যাপ্ত সম্পদ, অর্থ এবং জনবল নেই।

যুদ্ধবিরতির কার্যকারিতা

যুক্তরাষ্ট্রের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ৬০ দিনের মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীকে লেবানন থেকে প্রত্যাহার করা হবে। এ সময় লেবাননের সেনাবাহিনী ব্লু লাইনের আশপাশে টহল দেবে, এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থায় যোগ দেবে। তবে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির লঙ্ঘন হলে অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হবে, এবং ফরাসি ও যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা লেবাননের বাহিনীকে প্রশিক্ষণ এবং সহায়তা প্রদান করবে।

হেজবুল্লাহ কী?

হেজবুল্লাহ একটি শিয়া মুসলিম সংগঠন, যা লেবাননের সবচেয়ে শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করে। এটি ১৯৮০-এর দশকে ইরান প্রতিষ্ঠা করেছিল ইসরায়েলের বিরোধিতা করার জন্য। ২০০০ সালে ইসরায়েল যখন সৈন্য প্রত্যাহার করে, হেজবুল্লাহ এই কৃতিত্ব দাবি করে এবং দক্ষিণ লেবাননে তাদের ঘাঁটি শক্তিশালী করে।

ইসরায়েল ও হেজবুল্লাহর মধ্যে ২০০৬ সালে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ শুরু হয়, যার পর থেকে হেজবুল্লাহ তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডার বৃদ্ধি ও উন্নত অস্ত্র সংগ্রহ করেছে। পশ্চিমা দেশগুলো এবং ইসরায়েল হেজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করে।

সূত্র: বিবিসি

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।