তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাকালীন কমিটির সদস্য সংখ্যা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে জানা গেছে, কমিটির গঠন দুইটি প্রধান প্ল্যাটফর্মের মধ্যে ভাগ হবে—জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, যেখানে প্রতি প্ল্যাটফর্ম থেকে ৫০ শতাংশ নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
আগামীকাল, শুক্রবার বিকেল ৫টায়, রাজধানী ঢাকা’র মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে সব সদস্যের নাম ঘোষণা নাও হতে পারে। তবে শীর্ষ পদগুলির (যেমন, ছয় বা তার বেশি পদ) জন্য মনোনীত নেতাদের নাম ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটির এক দায়িত্বশীল নেতার পক্ষ থেকে। অন্য পদগুলির জন্য মনোনীত নেতাদের নাম পরে ঘোষণা করা হবে।
এদিকে, নতুন দলের আহ্বায়ক হিসেবে নাহিদ ইসলাম এবং সদস্যসচিব হিসেবে আখতার হোসেনের নাম ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত হয়েছে। মুখ্য সংগঠক ও মুখপাত্র পদে সারজিস আলম এবং হাসনাত আবদুল্লাহর নামও প্রায় চূড়ান্ত, জানাচ্ছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
শিবিরের সাবেক নেতাদের অযাচিত উপস্থিতি
নতুন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক পদে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি আলী আহসান জোনায়েদের নাম শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি নতুন দলের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন না। পরবর্তী সময়ে ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আরেক সাবেক সভাপতি রাফে সালমান রিফাতও ফেসবুকে একই ঘোষণা দেন। এছাড়া শিবিরের আরেক সাবেক নেতা আরেফীন মোহাম্মদ হিযবুল্লাহও নতুন দলে যোগ দেবেন না বলে জানা গেছে।
তবে, এই সাবেক শিবির নেতাদের বাদ দিয়েও শিবিরের সঙ্গে যুক্ত থাকা কিছু নেতার নাম নতুন দলের সম্ভাব্য কমিটিতে থাকতে পারে। জাতীয় নাগরিক কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক পদে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এবং জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব পদে সামান্তা শারমিনের নাম আলোচনায় রয়েছে। অন্য গুরুত্বপূর্ণ পদে সারোয়ার তুষার, তাসনিম জারা, আরিফুল ইসলাম আদীব, এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আবদুল হান্নান মাসউদ সহ বেশ কয়েকজন থাকতে পারেন।
আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রস্তুতি
জানা গেছে, আগামী শুক্রবার অনুষ্ঠানের জন্য অনুমতি চেয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশকে চিঠি দিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। অনুষ্ঠানটির প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বিভিন্ন উপকমিটি তৈরি করে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন।
নাগরিক কমিটি পুনর্গঠন
নতুন দলের আত্মপ্রকাশের পরও জাতীয় নাগরিক কমিটি কার্যক্রম চালিয়ে যাবে, তবে তা নতুন রাজনৈতিক দলের পরিপূরক হিসেবে থাকবে। দল গঠন প্রক্রিয়া শেষে নাগরিক কমিটি ‘সিভিল-পলিটিক্যাল’ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে অবশিষ্ট থাকবে এবং আর কোনো নতুন দল গঠনের উদ্যোগ নেবে না।
এছাড়া, ২৮ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) নতুন দলের ঘোষণার আগপর্যন্ত নাগরিক কমিটির ১২০ সদস্যের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। যারা দলে যোগ দেবেন, তাঁদের সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে এবং নতুন দলের পদের জন্য বাদপড়া সদস্যদের নিয়ে নাগরিক কমিটি পুনর্গঠিত হবে।