শীতকালে ঠান্ডা পরিবেশ এবং ধুলাবালি বাড়তে থাকে, যা শরীরের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। এই পরিবর্তিত আর্দ্রতায় শরীর খাপ খাওয়াতে গিয়ে অনেক সময় গলার বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। শীতকালে আমাদের শরীরে, বিশেষ করে টনসিল, ফ্যারিংস, নাসিকা ও গলার অন্যান্য অংশে অসংখ্য ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া থাকে, যেগুলি তাপমাত্রা কমলে সক্রিয় হয়ে ইনফেকশনের সৃষ্টি করতে পারে। শীতে গলার যেসব সমস্যা সাধারণত দেখা যায়:
১. গলা ব্যথা (ফ্যারিনজাইটিস)
শীতকালে গলা ব্যথা, জ্বর বা খুসখুসে কাশি একটি সাধারণ সমস্যা। এটি ফ্যারিনজাইটিসের লক্ষণ, যা গলার পেছনের প্রদাহকে নির্দেশ করে। শীতকালে অনেকেই সকালে ঘুম থেকে উঠে গলা ব্যথা অনুভব করেন এবং কিছুটা অসুবিধা অনুভব করেন খাবার গিলতে। সাধারণত ভাইরাসজনিত কারণে এটি হয়ে থাকে। শীতকালে পানি কম পান করার কারণে পরদিন গলা শুকিয়ে ব্যথা হতে পারে।
ফ্যারিনজাইটিস থেকে রক্ষা পেতে ঠান্ডা পরিহার করা প্রয়োজন। শীতের রাতে ঘুমানোর আগে গলায় একটি পাতলা সুতির মাফলার বা কাপড় পেঁচিয়ে নিতে পারেন। নিয়মিত হাত ধোয়া এবং মুখ থেকে হাত দূরে রাখা উচিত। গলা ব্যথায় গরম পানির সঙ্গে লবণ মিশিয়ে গড়গড়া করলে উপকার পাওয়া যায়। আদা, মধু, লবঙ্গ ইত্যাদিও গলা ব্যথায় সহায়ক।
২. গলা ভাঙা (কণ্ঠস্বর বসে যাওয়া)
শীতে ঠান্ডা ও ভারী বাতাসের কারণে গলার ভোকাল কর্ড বা কণ্ঠনালি আক্রান্ত হতে পারে, যার ফলে কণ্ঠস্বর বসে যেতে পারে। শীতকালে বাতাসের কারণে ধুলা, ময়লা এবং দূষণ বেড়ে যায়, যা সাইনাস ও নাকের সংক্রমণ সৃষ্টি করতে পারে এবং সেখান থেকে গলাতেও সংক্রমণ হতে পারে। কণ্ঠস্বর বসে যাওয়ার ক্ষেত্রে গরম পানির ভাপ নিলে উপকার পাওয়া যায়। গরম পানির মধ্যে মেনথল মিশিয়ে ইনহেলেশন করলে সুরক্ষা পেতে পারেন।
৩. টনসিলের ইনফেকশন
শীতকালে টনসিলের ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা। এটি জীবাণু সংক্রমণের কারণে হতে পারে এবং শীতে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা কমে যায়। শিশুদের শীতকালে ঠান্ডা পানি খাওয়া বা অপর্যাপ্ত শীতের পোশাক পরা, অথবা দুর্বল স্বাস্থ্য ও অপুষ্টির কারণে টনসিলের প্রদাহ দেখা দিতে পারে। টনসিলের গুরুতর ইনফেকশন হলে গলা ফুলে যায় এবং ব্যথা অনুভূত হয়। এ ধরনের সমস্যার চিকিৎসার জন্য দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
শীতকালে সুস্থ থাকতে হলে সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই শীতে নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করুন এবং পরিবারের সদস্যদেরও সুস্থ থাকতে সহায়তা করুন।